“Book Descriptions: পঞ্চনদের তীরে উপন্যাস বটে, কিন্তু এর আখ্যানবস্তু কোথাও ঐতিহাসিক ভিত্তি ছেড়ে অগ্রসর হবার চেষ্টা করেনি। যে-সময়ের কথা আমি বলতে বসেছি, সে-সময়কার ঐতিহাসিক সূত্র এখনও নানা স্থানে বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে, সেই কারণে স্থলবিশেষে উপন্যাসের মর্যাদা ও ধারাবাহিকতা রক্ষা করবার জন্যে কিছু-কিছু কল্পনার আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছি কিন্তু সে-কল্পনাও কোথাও ঐতিহাসিক সত্যকে বাধা দেয়নি। ধরুন, শশীগুপ্তের কথা। ওই দেশদ্রোহীর শেষ জীবন অতীতের অন্ধকারের মধ্যে চিরদিনের জন্যে লুপ্ত হয়ে গেছে, ইতিহাসও তার সম্বন্ধে নীরব। কিন্তু তার একটা পরিণাম দেখালে উপন্যাস হয় অসম্পূর্ণ। অতএব ওখানে কল্পনা ব্যবহার করা ছাড়া উপায়ান্তর নেই এবং গোড়া ঐতিহাসিকরাও সেইজন্যে আপত্তি প্রকাশ করবেন বলে মনে হয় না। তারপর ধরুন, সুবন্ধু প্রভৃতি সম্পৰ্কীয় ঘটনাবলি। প্রাচীন ইতিহাসকে ভালাে করে গল্পের ভিতর দিয়ে দেখাবার জন্যেই ওদের অবতারণা করা হয়েছে। সুবহু প্রভৃতি ভাগ্যান্বেষী সৈনিক বটে, কিন্তু সেকালকার ভারতে ওদের মতন লােকের ভিতরেও যে অতুলনীয় বীরত্ব ও স্বদেশভক্তির অভাব ছিল না, Massaga নামক স্থানে আলেকজান্ডারের দ্বারা সাত হাজার ভারতীয় ভূতক-সৈন্যের (mercenaries) হত্যাকাণ্ডেই তার জ্বলন্ত প্রমাণ পাওয়া যায়। তারা প্রত্যেকে সপরিবারে প্রাণ দিল, তবু বিদেশি শত্রুর অধীনে চাকরি স্বীকার করল না। অতএব কাল্পনিক হলেও সুবন্ধু প্রভৃতিকে আমরা ঐতিহাসিক ভারতীয় চরিত্র বলে গ্রহণ করতে পারি অনায়াসেই।” DRIVE