“Book Descriptions: "‘পাইয়া ফিরিঙ্গ ডর’ একটি ঐতিহাসিক উপন্যাস। সপ্তদশ শতকের গোড়ার দিকে, বাংলার প্রাক-ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক পর্যায়ে, যখন পর্তুগীজ ও মগরা এদেশের জলজঙ্গল দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, এ-আখ্যান সেই সময়ের। আখ্যান অবিশ্যি একটি নয়, বরং, তিন-চারটি কাহিনীসূত্র, সমান্তরালভাবে, প্রসারিত হয়েছে। ফলে, এই উপন্যাসে, সেই-অর্থে কোনো কেন্দ্রীয় চরিত্র নেই। একাধিক স্বর, বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ ও বাচনভঙ্গীর সহাবস্থানে, কাহিনীশরীরে একধরণের অসমানতা ফুটে ওঠে, যা কতকটা স্ফটিকের মতো, বহুকৌণিক। সময়, যেকোন আখ্যানেই, একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কিন্তু ঐতিহাসিক উপন্যাসে, সময় নিজেই যেন একটা চরিত্র হয়ে ওঠে। ফলে, আগ্রহ থাকে, লেখক তাঁর আখ্যানশরীরে কীভাবে সময়কে ব্যবহার করছেন, তা দেখার। রাজর্ষির আখ্যানে, সময়ের প্রবাহ সর্বদা সরলরৈখিক নয়। মাঝেমধ্যেই দেখি, একটি অধ্যায় থেকে পরবর্তী অধ্যায়ের মধ্যে, লুকিয়ে রয়েছে সময়ের চোরা ফাটল বা চ্যুতি। যেমন, উপন্যাসের প্রথমার্ধে, টিবাও-ভিষকু-ক্রিশ্চিয়ানোকে কেন্দ্র করে বোনা কাহিনীসূত্র আর নগেন পাড়ুই বা শ্যামল-ওফেলিয়ার কাহিনীসূত্রের মধ্যে কয়েক-বছরের ফাঁক রয়েছে, যার ফলে কাহিনী এগোয় তাঁতের মাকুর মতো, আগুপিছু, কাহিনী ও সময়ের স্তরগুলিকে বুনতে-বুনতে। শুধু তাই নয়, এই আলাদা ও সমান্তরাল কাহিনীগুলি, নিজেরাও, একটানা সোজাপথ ধরে এগোয় না। বরং, সময়ের ছোটো-ছোটো সোঁতা আর ঝোরাগুলোকে লঘুপায়ে লাফিয়ে ডিঙিয়ে যেতে থাকে। ব্যাপারটা শুনতে বা ভাবতে যত সোজা বলে মনে হয়, আদতে তা নয়। লেখকের দক্ষতা ও নৈপুণ্যকে, এ-বাবদে, সাধুবাদ না-জানিয়ে উপায় থাকে না।"” DRIVE