নারাচ (নারাচ, #1)



Note: If you encounter any issues while opening the Download PDF button, please utilize the online read button to access the complete book page.
Size | 23 MB (23,082 KB) |
---|---|
Format | |
Downloaded | 612 times |
Status | Available |
Last checked | 10 Hour ago! |
Author | Debarati Mukhopadhyay |
“Book Descriptions: ১৮৮৭ সালের ২৫ শে মে হাওড়ার চাঁদপাল ঘাট থেকে স্যার জন লরেন্স নামক এক প্রকাণ্ড জাহাজ মহাসমারোহে রওনা দিয়েছিল পুরীর উদ্দেশ্যে। সমুদ্রপথে বালেশ্বর হয়ে কটক। সেখান থেকে পদব্রজে পুরী। এইভাবেই তখন যাত্রা করতে হত নীলাচলধামে।
কিন্তু বঙ্গোপসাগরে প্রবল ঘূর্ণিঝড় এবং সামর্থ্যের তুলনায় অতিরিক্ত যাত্রীগ্রহণে জাহাজটির সলিল সমাধি ঘটে। মৃত্যু হয় সাড়ে সাতশোজন মানুষের, যাদের অধিকাংশই মহিলা। নেটিভ বলেই হয়ত সেভাবে আলোড়ন পড়েনি সমাজে।
ধীরে ধীরে ইতিহাসের পাতায় চাপা পড়ে যায় টাইটানিক জাহাজডুবির প্রায় পঁচিশ বছর আগের সেই হৃদয়বিদারক ঘটনা। হাওড়ার জগন্নাথঘাটের বিবর্ণ এক স্মৃতিফলক এখনো জানান দেয় সেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার। বস্তুত এর পরেই পুরী পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণে উদ্যোগী হয় ব্রিটিশ সরকার।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন সমাজের তুলনামূলক স্বল্প আলোচিত নানা বিষয়কে কেন্দ্র করে এক বহুস্তরীয় উপন্যাস নারাচ। এতে রয়েছে ইন্ডেনচারড লেবার হিসেবে সেইসময়ে হাজার হাজার ভারতীয়কে ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলিতে চালান দেওয়ার কথা, লক্ষনৌয়ের নির্বাসিত নবাব ওয়াজেদ আলী শাহ্র কলকাতায় এসে মেটিয়াবুরুজে এক টুকরো লক্ষনৌ গড়ে তোলার কথা, ডঃ কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়ের সংগ্রাম এবং বাল্য বিবাহের বিরুদ্ধে আসা সহবাস সম্মতি আইনের পক্ষে ও বিপক্ষে নানা সংগ্রামের আলেখ্য ও আরো নানা দিক।
নবজাগরণের উন্মেষকাল উনবিংশ শতক নিয়ে বাংলায় কাজ হয়েছে প্রচুর। প্রতিটি কাজই অসামান্য গবেষণা ও সাহিত্যগুণে সমৃদ্ধ হলেও যেন বিশেষ কিছু বিষয়েই সীমাবদ্ধ। নবজাগরণ, সমাজ সংস্কার এইসব আলোকিত দিক ছাড়াও সেই যুগে অবধারিত ভাবেই ছিল কিছু প্রান্তিক মানুষ। যারা বিস্মৃতপ্রায়।
লখনৌয়ের নির্বাসিত নবাব ওয়াজেদ আলী শাহ্ কলকাতার মেটিয়াবুরুজে গড়ে তুলেছেন একটুকরো লক্ষনৌ। তার সেই আনন্দনগরী যেন কলকাতা শহরে বড় ব্রাত্য। সমান্তরালে রমরমিয়ে চলছে অষ্টমবর্ষে গৌরীদানের সেই নিয়ম। প্রতিবছর নীরবে অকালকুসুমের মত ঝরে যাচ্ছে অপরিণত নাবালিকারা, স্বামীর ধর্ষণে। রক্ষণশীল সমাজ তা নিয়ে নিরুত্তর। সহবাস সম্মতি আইন তাঁরা কিছুতেই পাশ হতে দেবেন না। হিন্দু শাস্ত্রে বিবাহ বা সহবাসে মেয়েদের সম্প্রদান করেন তাদের পিতা, তাই সহবাসে অধিকার অপ্রয়োজনীয়।
‘নারাচ’ সেই ব্যতিক্রমী প্রান্তজনদের অব্যক্ত সংগ্রাম তুলে ধরার একটি প্রয়াস। চুক্তিবদ্ধ ইন্ডেনচারড শ্রমিকরাই হোক বা অষ্টমবর্ষে গৌরীদান হওয়া মেয়েরা, যারা শত বাধাবিপত্তিতেও বারবার উঠে দাঁড়িয়েছে, ফিরে আসতে চেয়েছে মূল স্রোতে, বঞ্চিত ও শোষিত সেই মানুষদের জীবনগাথার প্রবাহপথে কৃষ্ণসুন্দর, ভুবনমণি ও আরো কয়েকজন প্রান্তিক মানুষের লড়াই এই উপন্যাসের উপজীব্য ।”