রসুইঘরের রোয়াক

(By স্মৃতি ভদ্র)

Book Cover Watermark PDF Icon
Download PDF Read Ebook

Note: If you encounter any issues while opening the Download PDF button, please utilize the online read button to access the complete book page.

×


Size 21 MB (21,080 KB)
Format PDF
Downloaded 584 times
Status Available
Last checked 8 Hour ago!
Author স্মৃতি ভদ্র

“Book Descriptions: "রোয়াক এক অদ্ভুত আনন্দময় সৃষ্টি। প্রচ্ছদটি দেখেই তাই মনে হচ্ছে না? স্মৃতি ভদ্রের স্মৃতির আঙ্গিনায় বসে তাঁর ঠাকুমা, মনিপিসি, কোহিনূর ফুফু, গোলেনূর দাদীরা যেন সাদা ফুল, চন্দন, আতপচাল, বেলপাতার ডাল সাজিয়ে বাংলার সত্তাকে আমাদের আত্মার উঠোনে নিয়ে আসছেন। সেখানে মৌ মৌ গন্ধ তোলে ঝিঙেশাইল আতপের বৌখুদ, তুলসীমালা চালে মুগের ডাল আর কুচানো আলু, চিতলের লাল রসায় আউশের ভাত, ডাটা আর জালি কুমড়া দিয়ে মাসকলাইয়ের ডাল, জোলাভাতিতে আলুবেগুন দিয়ে খিচুড়ি, তিলের ক্ষীরশা, তুলসীমালা চালের পায়েস। এই বইটি স্মৃতি ভদ্র গড়েছেন যতনে - কলার পাতায় সাজিয়েছেন তাঁর সাতটি কলমি ফুল, সাতটি তুলসীপাতা, ধান আর দূর্বা। পাঠকের জিভকে রসুইখানার রন্ধন আকৃষ্ট করবে, কিন্তু খাবার যেন মুখ্য নয়, এই বইটি রন্ধন-উত্তর একটি জগতের সন্ধান দেয়, যে জগতটি ক্রমশ অপসৃয়মান, যে জগতে পালন হত তিলের সংক্রান্তি, বসুধারার ব্রত হত তিন বৃক্ষের মাঝে, তাঁতঘরে মাকু টানার শব্দের ওপর ভেসে আসত গান – ‘বটবৃক্ষের ছায়া যেমন রে, মোর বন্ধুর মায়া তেমন রে।’ প্রাচীন এক বটগাছ ছাড়িয়ে যে জগতটি ছ’ বছরের এক বালিকা ফেলে এসেছে, আজ সে পেছনে ফেরার মন্ত্রটি আমাদের জন্য আবার সৃষ্টি করেছে। সেই সৃষ্টির প্রতিটি শব্দ, প্রতিটি বাক্য যে মোহময় মায়াময় অতীতকে গঠন করে তা পাঠককে সম্মোহিত করে রাখবে। বাংলা সাহিত্যে ‘রসুইঘরের রোয়াক’ এক ব্যতিক্রমী সংযোজন, সেখানে স্মৃতি ভদ্রের পরম যত্নে গড়া রোয়াকে বসে পাঠক নিজের অতীতকেই আবিষ্কার করবেন।"

--- লেখক দীপেন ভট্টাচার্য



রান্নাঘর শব্দটিই এখন প্রায় হারিয়ে গেছে। রান্নাঘর হয়ে উঠেছে কিচেন। কিচেনে রেসিপি অনুসারে ডিশ কুক করা হয়। পদ রান্না করা হয় না।
রান্নাঘরের গালভরা নাম ছিল রসুইঘর। সেখানে বাড়ির গিন্নিরা রান্না করতেন। শাশুড়ি ঠাকরুণের তত্ত্বাবধানে, বাড়ির বড়, মেজো, ছোট বউমা, ননদিনিরা, বিধবা কিংবা নাইয়রী মাসি-পিসি এই রান্নাঘর জুড়ে রসিয়ে রসিয়ে গল্প বুনতেন আর সপ্তব্যঞ্জন রান্নার জোগান দিতেন। কেটে, বেটে রেঁধে খাবার বেড়ে খাওয়াতেন বাড়ির পুরুষদের, কখনো কখনো অতিথি নারায়ণকে। সে এক উজ্জ্বল সংস্কৃতি ছিল বাঙালির। আয়োজনের প্রাণস্পর্শে সেই খাবার হয়ে উঠত ‘অমৃত’।
জমির দীঘা ধানের চাল, পালংশাক, লালশাক, পাটশাক, মানকচু সেদ্ধ, পুঁই চচ্চড়ি, মুগ, মসুর, মাষকলাইয়ের ডাল, খিচুড়ি, কচুরি, পুরি, বেগুনভাজি, নলা মাছ, লাউয়ের ঘণ্ট, নলেন গুড়, সদ্য ভাজা মুড়ি, রসপুলি, সরষে ইলিশ, কই মাছের পাতুরি, ইচামাছ, নাড়ু, মোয়া, পায়েস, পিঠা যেন রূপকথার জগৎ থেকে নেমে আসা সব খাবার। খাবারের মানুষগুলো। আর তাদেরকে ঘিরে একান্নবর্তী পরিবার, পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন মিলেমিশে একসময় এক ঘরে পাত পড়ত। ঋতু বদলের সঙ্গে সঙ্গে খাবারেরও রূপ বদল হতো। সঙ্গে যুক্ত হতো ছড়া, শোলোক, গান, ব্রতকথা আর রূপকথা। ধীরে ধীরে এসব এখন স্মৃতিকথা হয়ে গেছে। আরও কিছুকাল পরে হয়তো স্মৃতি থেকেও উধাও হয়ে যাবে। হারিয়ে যাবে আমাদের রসুইঘর আর তাদের একান্নবর্তী রোয়াকের মানুষগুলো।
স্মৃতি ভদ্র গল্পকার। তিনি লেখেন গল্পের ভঙ্গিতে। তাই নিতান্ত খাদ্যখাবারও হয়ে ওঠে গল্পের মতো ঘটনাপূর্ণ মনোহর। তাঁর হাতে রয়েছে এক রূপভাষ্য। সবকিছু ছবি হয়ে ফুটে ওঠে পাঠকের চোখের সামনে। হারানো স্মৃতিকেই তিনি ফিরিয়ে আনেন। মর্মে গেঁথে দেন অনায়াসে।
স্মৃতি ভদ্র এক জাদুকরী শৈলীতে এক বালিকার চোখে দেখা রসুইঘরের রোয়াকের সঙ্গে সঙ্গে বাঙালির হাজার বছরের শান্ত, স্নিগ্ধ, সুখী গার্হস্থ্য গাথা বলেছেন এই গ্রন্থে।
বইটি অবশ্যপাঠ্য হয়ে উঠেছে।”